প্রাক্কলন পদ্ধতি

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - পরিসংখ্যান - পরিসংখ্যান ২য় পত্র | | NCTB BOOK

প্রাক্কলন পদ্ধতি (Estimation Methods)

পরিসংখ্যানে প্রাক্কলনের মাধ্যমে নমুনা থেকে জনসংখ্যার বৈশিষ্ট্য অনুমান করা হয়। প্রাক্কলনের পদ্ধতিগুলো মূলত দুই ধরনের: গাণিতিক পদ্ধতি এবং আনুমানিক পদ্ধতি


গাণিতিক পদ্ধতি (Statistical Methods)

গাণিতিক পদ্ধতিতে প্রাক্কলন করার জন্য নমুনা থেকে গণিত ও পরিসংখ্যানের বিভিন্ন সূত্র ব্যবহার করা হয়। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

গড়ের ব্যবহার (Mean)

  • নমুনার গড় ব্যবহার করে প্রাক্কলন করা হয়।
  • সূত্র:
    \[
    \bar{x} = \frac{\Sigma x}{n}
    \]
    এখানে,
    \( \bar{x} \) = নমুনার গড়
    \( \Sigma x \) = নমুনার মানগুলোর যোগফল
    \( n \) = নমুনার সংখ্যা

উদাহরণ:
যদি কোনো এলাকার নমুনা আয়ের মান হয় $২০,০০০, $২৫,০০০ এবং $২২,০০০, তবে গড়:
\[
\bar{x} = \frac{২০০০০ + ২৫০০০ + ২২০০০}{৩} = ২২,৩৩৩
\]


মধ্যমার ব্যবহার (Median)

  • নমুনার মধ্যবর্তী মান ব্যবহার করে জনসংখ্যার বৈশিষ্ট্য প্রাক্কলন করা হয়।
  • এটি এমন পরিস্থিতিতে কার্যকর যেখানে গড় অতিরিক্ত বড় বা ছোট মান দ্বারা প্রভাবিত হয়।

উদাহরণ:
নমুনা আয়: $১৮,০০০, $২০,০০০, $২২,০০০, $২৪,০০০, এবং $২৬,০০০।
মধ্যমা: $২২,০০০ (মধ্যবর্তী মান)।


মোডের ব্যবহার (Mode)

  • নমুনায় সবচেয়ে ঘন ঘন উপস্থিত মান ব্যবহার করা হয়।
  • এটি প্রাক্কলনের জন্য সহায়ক যেখানে একটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের সবচেয়ে সাধারণ মান জানতে হবে।

উদাহরণ:
নমুনা: $১৫,০০০, $২০,০০০, $২০,০০০, $২৫,০০০।
মোড: $২০,০০০ (সবচেয়ে ঘন ঘন উপস্থিত)।


বিস্তার প্রাক্কলন (Interval Estimation)

  • গাণিতিক পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে প্রাক্কলন করা হয়।
  • বিশ্বাসযোগ্যতার স্তর (Confidence Level) নির্ধারণ করা হয়, যেমন ৯৫% বা ৯৯%।

সূত্র:
\[
\bar{x} \pm Z \cdot \frac{s}{\sqrt{n}}
\]
যেখানে,
\( \bar{x} \) = নমুনার গড়
\( Z \) = নির্দিষ্ট বিশ্বাসযোগ্যতার স্তরের জন্য Z-স্কোর
\( s \) = নমুনার মান বিচ্যুতি
\( n \) = নমুনার সংখ্যা


আনুমানিক পদ্ধতি (Heuristic Methods)

আনুমানিক পদ্ধতি পূর্ব অভিজ্ঞতা এবং বাস্তবতার উপর ভিত্তি করে করা হয়।

১. পূর্ববর্তী তথ্যের ব্যবহার:

  • আগে সংগৃহীত তথ্য বা পূর্ববর্তী পরীক্ষার ফলাফল থেকে প্রাক্কলন করা হয়।
  • উদাহরণ: একটি এলাকার গত ৫ বছরের গড় বৃষ্টিপাত থেকে এ বছরের বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নির্ধারণ।

২. অভিজ্ঞতার ব্যবহার:

  • গবেষক বা বিশেষজ্ঞের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে প্রাক্কলন।
  • উদাহরণ: কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলে চাষাবাদের সম্ভাব্য ফলন অনুমান করা।

৩. পূর্বাভাস পদ্ধতি (Forecasting Techniques):

  • ঐতিহাসিক প্রবণতা বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যৎ অনুমান।
  • উদাহরণ: একটি কোম্পানির বিক্রয়ের প্রবণতা দেখে ভবিষ্যতের বিক্রয় পরিমাণ প্রাক্কলন।

উদাহরণ: প্রাক্কলন পদ্ধতি প্রয়োগ

উদাহরণ ১: গড়ের পদ্ধতি

নমুনা: $১০,০০০, $১২,০০০, $১৪,০০০।
গড়:

উদাহরণ ২: বিস্তার প্রাক্কলন

নমুনার গড়: $২২,০০০
বিশ্বাসযোগ্যতার স্তর: ৯৫%
\( Z = ১.৯৬, s = ২,০০০, n = ৩০ \)

সীমা: $২১,২৮৪ থেকে $২২,৭১৬।


সারসংক্ষেপ

প্রাক্কলন পদ্ধতিতে গাণিতিক এবং আনুমানিক উভয় পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। গাণিতিক পদ্ধতি অধিক নির্ভুল এবং পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে ফলাফল প্রদান করে, যেখানে আনুমানিক পদ্ধতি বাস্তব পরিস্থিতি ও অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে।

Promotion